পরশ্রীকাতরতা অর্থ অন্যের উন্নতি ও সৌভাগ্য দেখে ঈর্ষা প্রকাশ করা। অর্থাৎ কারো ধন-দৌলত, সম্মান, ভালো ফল বা উচ্চ মর্যাদা দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া এবং তার ধ্বংস কামনা করাকে পরশ্রীকাতরতা বলা হয়।
কুফল
পরশ্রীকাতরতা একটি মারাত্মক মানসিক ব্যাধি। এ ব্যাধি বহু কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন শত্রুতা, অহংকার, নিজের অসদুদ্দেশ্য নষ্ট হওয়ার আশংকা, নেতৃত্বের লোভ ইত্যাদি। এসব কারণে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি হিংসা বিদ্বেষ করে থাকে। ইসলাম এ কাজগুলো হারাম ঘোষণা করেছে। পরশ্রীকাতরতার অপকারিতা সীমাহীন। হযরত আদম (আ.)-এর পদমর্যাদা দেখে ইবলিস তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়। ফলে সে অভিশপ্ত হয় এবং আল্লাহ তায়ালার দয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
মানব সৃষ্টির পর ঈর্ষার কারণেই সর্বপ্রথম পাপ সংঘটিত হয়। আদম (আ.)-এর পুত্র কাবিল পরশ্রীকাতরতার বশবর্তী হয়ে তারই আপন ভাই হাবিলকে হত্যা করে। পরশ্রীকাতরতা মানুষের পুণ্য কাজগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেছেন,
অর্থ : “আগুন যেমন শুকনা কাঠকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয় পরশ্রীকাতরতা তেমনই পুণ্যকে ধ্বংস করে দেয় ।” (মুসনাদি)
পরশ্রীকাতরতা মানুষের শান্তি বিনষ্ট করে। মনে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রাখে। পরশ্রীকাতর ব্যক্তি আল্লাহ এবং মানুষের কাছে ঘৃণিত। কেউ তাকে ভালোবাসে না। কেউ তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে না। সমাজের লোকেরা তাকে এড়িয়ে চলে। পরশ্রীকাতরতা সমাজে ঝগড়া-ফাসাদ, মারামারি ও অশান্তি সৃষ্টি করে। মানুষের মনে অহংকার সৃষ্টি হয়। অহংকার মানুষের পতন ঘটায়।
আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে পরশ্রীকাতরতা থেকে বেঁচে থাকার শিক্ষা দিয়েছেন । কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
আমাদের প্রতিজ্ঞা
আমরা পরশ্রীকাতর হব না । নিজের পতন নিজে ডেকে আনব না । হিংসা করব ন। সমাজের শান্তি বিনষ্ট করব না।
কাজ : শিক্ষার্থীরা পরশ্রীকাতরতার কুফলের একটি তালিকা তৈরি করে শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে ঝুলিয়ে দেবে। |
আরও দেখুন...